A non-profit, non-political, charitable trust.
বিশেষ নিবিড় পুনর্বিবেচনা (SIR) ২০২৫: পূর্ণাঙ্গ ধাপে ধাপে নির্দেশিকা
স্পেশাল ইন্টেন্সিভ রিভিশন (SIR) একটি বিশেষ ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়া, যা শেষ ২০০২ সালে পশ্চিমবঙ্গে হয়েছিল, এবং ঘোষণা অনুযায়ী খুব শীঘ্রই শুরু হবে। তাই হাতের কাছে প্রয়োজনীয় তথ্য ও ডকুমেন্ট রাখা দরকার তা নিজে জানা ও অপরকে জানানো আমাদের কর্তব্য। এবারের প্রক্রিয়াটি আগের থেকে আলাদা হওয়ার জন্য অনেক বৈধ নাগরিকও ভীতসন্ত্রস্ত, যদিও চিন্তার কারণ তেমন কিছু নেই। এ নিয়ে নানান জল্পনার অবসান ঘটাতে এবং মানুষকে সঠিক তথ্য তুলে দিতে বিএলও দের পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। পিআইবি তার মধ্যে অন্যতম।
৪ নভেম্বর ২০২৫ থেকে নির্বাচন কমিশন শুরু করছে Special Intensive Revision (SIR) — এক বিশেষ ভোটার তালিকা পুনর্বিবেচনা অভিযান।
এই উদ্যোগে দেশের ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রায় অর্ধেক ভোটারকে নিজেদের তথ্য যাচাই করে ফর্ম পূরণ করতে হবে, যাতে নাম ভোটার তালিকায় বজায় থাকে।
যে অঞ্চলগুলো এই প্রক্রিয়ার অন্তর্ভুক্ত:
🗳️ আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ | ছত্তিশগড় | গোয়া | গুজরাট | কেরালা | লক্ষ্যদ্বীপ | মধ্যপ্রদেশ | পুদুচেরি | রাজস্থান | তামিলনাড়ু | উত্তরপ্রদেশ | পশ্চিমবঙ্গ
সময়সীমা: ৪ নভেম্বর – ৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
এই সময়ের মধ্যে বুথ লেভেল অফিসার (BLO) আপনার এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম বিতরণ করবেন। প্রয়োজনে BLO তিনবার পর্যন্ত আসতে পারেন।
এই ফর্মে আগেই থাকবে —
নাম
EPIC নম্বর
ঠিকানা
বিধানসভা কেন্দ্র
পার্ট ও সিরিয়াল নম্বর
আপনার পুরনো ছবি
যদি BLO এখনও না আসেন:
যান voters.eci.gov.in-এ
EPIC নম্বর দিয়ে সার্চ করুন
BLO-র যোগাযোগের তথ্য জেনে নিন। আপনার এলাকার BLO কে তা জানতে https://electoralsearch.eci.gov.in/uesfmempmlkypo ওয়েবসাইট ভিজিট করুন এবং সেখানে "Know Your Polling Officials" অপশন সিলেক্ট করে সেখানে ভোটার কার্ডের ডিটেইলস ও ক্যাপচা দিলেই আপনি পেয়ে যাবেন।
নিজে পূরণ করতে চান?
ফর্ম ডাউনলোড করুন 👉
🔹 voters.eci.gov.in
🔹 ECINet অ্যাপ
ফর্মে কিছু তথ্য আগেই ছাপা থাকবে। বাকিটা যাচাই করে পূরণ করতে হবে —
✅ জন্মতারিখ
✅ বাবা-মায়ের নাম ও EPIC নম্বর
✅ মোবাইল নম্বর
✅ আধার নম্বর (ঐচ্ছিক)
✅ নতুন ছবি (ঐচ্ছিক)
এবার প্রত্যেক ভোটারকে নিজের বা পরিবারের কারও নাম ২০০২–২০০৫ সালের SIR ভোটার তালিকা থেকে খুঁজে বের করতে হবে (রাজ্যভেদে সাল আলাদা)।
যেভাবে খুঁজবেন:
যান voters.eci.gov.in-এ
“Past SIR Rolls” বিভাগে যান
আপনার রাজ্য বেছে নিন (যেমন গুজরাট → ১ জানুয়ারি ২০০২-এর তালিকা)
নিজের বা আত্মীয়ের নাম পেলে নোট করুন:
বিধানসভা কেন্দ্র
পার্ট নম্বর
সিরিয়াল নম্বর
এগুলো বর্তমান ফর্মে লিখুন
👉 টিপস: BLO আসার আগেই নাম খুঁজে রাখুন।
যদি আগের তালিকায় নিজের নাম না পান, তাহলে বাবা-মা বা ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের নাম দিয়ে খুঁজুন।
এই ধাপে কোনো নথি দিতে হবে না।
আপনি ফর্ম জমা দিতে পারেন দুটি উপায়ে —
অফলাইন:
BLO এলে হাতে ফর্ম দিন। তিনি একটি কপি রাখবেন এবং একটি রসিদ দেবেন।
অনলাইন:
voters.eci.gov.in-এ গিয়ে ফর্ম জমা দিন।
স্ক্রিনশট বা রসিদ সংরক্ষণ করুন এবং BLO-কে জানিয়ে দিন যে অনলাইনে জমা দিয়েছেন।
👨👩👧 পরিবারের যেকোনো প্রাপ্তবয়স্ক সদস্য অন্যদের হয়ে ফর্ম পূরণ ও সই করতে পারেন।
যাঁদের “পুরনো তালিকা” অংশ ফাঁকা থাকবে, তাঁদের BLO বা ERO (নির্বাচন নিবন্ধন কর্মকর্তা) ডিসেম্বরের পর নথি জমা দিতে বলতে পারেন।
প্রয়োজনীয় নথির তালিকা:
সরকারি/PSU কর্মচারীর আইডি বা পেনশন পেপার
১ জুলাই ১৯৮৭-এর আগে কোনো সরকারি/ব্যাংক/LIC/PSU পরিচয়পত্র
জন্মসনদ
পাসপোর্ট
মাধ্যমিক/উচ্চমাধ্যমিকের মার্কশিট
ডোমিসাইল সার্টিফিকেট
বনাধিকার সার্টিফিকেট
জাতিগত (OBC/SC/ST) সার্টিফিকেট
NRC (যদি থাকে)
পারিবারিক নিবন্ধন (স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক)
সরকারি জমি/বাড়ি বরাদ্দপত্র
বিহার SIR নির্যাস (রেফারেন্স: ০১.০৭.২০২৫)
আধার (শুধুমাত্র অন্য নথির সঙ্গে)
জন্মসালের ভিত্তিতে নথির নিয়ম:
১ জুলাই ১৯৮৭-এর আগে : নিজের নথি
১ জুলাই ১৯৮৭ – ২ ডিসেম্বর ২০০৪: নিজের + এক পিতা/মাতা
২ ডিসেম্বর ২০০৪-এর পরে: নিজের + দুই পিতা-মাতা
প্রাপ্তবয়স্ক যেসকল ভারতীয় এই রাজ্যে নতুন করে ভোটার হতে চান তারা এখন ফর্ম ৬ ফিল আপ করবেন। যদি অন্য রাজ্যে ২০০২ সালে নাম থেকে থাকে তাকে বা তার রিলেটিভ এর তাদের কে Anexure III সাথে Anexure IV ও ফিল আপ করতে হবে ।
প্রকাশ: ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫
আপনার নাম পরীক্ষা করুন —
অথবা আপনার ভোটকেন্দ্রে গিয়ে
যদি নাম না থাকে বা ভুল থাকে, তাহলে ৮ জানুয়ারি, ২০২৬ পর্যন্ত আপত্তি বা দাবি জানাতে পারবেন।
ডিসেম্বর–জানুয়ারি সময়ে BLO বা ERO প্রয়োজনে অতিরিক্ত নথি চাইতে পারেন।
তারিখ: ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৬
চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর নিজের নাম যাচাই করে নিন।
যদি নাম বাদ পড়ে যায় —
১৫ দিনের মধ্যে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আপিল করুন।
আপিল খারিজ হলে, পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে রাজ্যের Chief Electoral Officer (CEO)-এর কাছে আবেদন করুন।
ধাপ : সময়কাল
বাড়ি বাড়ি গণনা: ৪ নভেম্বর – ৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ: ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫
দাবি ও আপত্তি গ্রহণ: ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ – ৮ জানুয়ারি, ২০২৬
যাচাই ও শুনানি: ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ – ৩১ জানুয়ারি, ২০২৬
চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ: ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৬
এই SIR ২০২৫ প্রক্রিয়ায় প্রায় দুই দশকের পুরনো ভোটার তালিকার সঙ্গে মিলিয়ে নাম যাচাই করা হবে। এর মাধ্যমে ভুল তথ্য সংশোধন, মৃত বা অনুপস্থিত ভোটারদের নাম অপসারণ এবং নতুন যোগ্য ভোটারদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
নির্বাচন কমিশনের মতে, এটি ভারতের ভোটার তালিকাকে আরও সঠিক ও নির্ভরযোগ্য করে তুলবে।
(তথ্যসুত্র - এই নির্দেশিকাটি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর ২৮ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে বাংলায় পুনর্লিখিত ও সম্পাদিত। লিঙ্ক -https://indianexpress.com/article/explained/special-intensive-revision-10332008/)
ভিডিও গাইড